
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাত তখন ২টা । নগরজুড়ে ঘুম নেমে এসেছে, তবে রাজধানীর অলিগলির অন্ধকারে তখনও চলছিল এক অদৃশ্য বাণিজ্য—মরণনেশার বাণিজ্য। জিরো পয়েন্ট থেকে পোস্তগোলা , জুরাইন ও গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর—মাদক যেন ছায়ার মতো ছড়িয়ে পড়েছে শহরের প্রতিটি কোণে।
বিষয়য়টি নিয়ে গত কয়েকদিন করেছেন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর ব্যস্ততম মোড়ে মোড়ে দাঁড়ালেই মেলে ‘ঘুমের ওষুধ’—যা আদতে ঘুম নয়, বরং ধ্বংসের চূড়ান্ত দাওয়াই। দিনে দিনে অবাধে ছড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা, আইস, ফেন্সিডিল, গাঁজার মতো মরণনেশা।
প্রতিবেদক রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন এলাকার একজন মাদকসেবীর সাথে কথা বলতে বলতে জানতে চাওয়া হয় এই এলাকায় ভালো মাল (ইয়াবা) কোথায় পাওয়া যাবে তিনি বললেন আছে পোস্তগোলার জাহিদের জিনিস সবচেয়ে ভালো কিন্তু দাম একটু বেশি ৩০০ টাকা প্রতিবেদক কিনতে তার সাথে যেতে যেতে জানতে পারেন জাহিদ ও তার স্ত্রী মিতু দুজনেই মাদক ব্যবসা করে থাকেন পোস্তগোলা ১৫৯ নং বাড়ির সামনে গেলেই জাহিদ বাসা থেকে বের হয়ে আসে তার হাতে একটি প্যাকেট খুলেই বলছে কয়টা ৩০০ টাকা করে কম হবে না বললেন মাদক ব্যবসায়ী জাহিদ ।
কে এই জাহিদ ও মিতু?
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়াবহ এক চিত্র স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তুলেছেন এক অভিনব মাদক বিক্রয় নেটওয়ার্ক, যার পর্দার আড়ালে চলছে লক্ষ লক্ষ টাকার কারবার।
জাহিদ বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছিল মাদক বাণিজ্য, চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ। জেল খেটে বেরিয়ে আসে ‘নতুন’ পথে। স্ত্রীকে নিয়ে শুরু করে ইয়াবা বিক্রি। মিতু ছিল প্রথমে অনিচ্ছুক, কিন্তু পরে এই লাভজনক ব্যবসার মোহে জড়িয়ে পড়ে পুরোপুরি। এখন সে নিজেই ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করে, শ্যামপুর থানার পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পুলিশ কি জানে না?
স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি এলাকায় ওপেন সিক্রেট। মাঝেমধ্যে পুলিশি অভিযান হলেও, জাহিদ ও মিতু আশ্চর্যজনকভাবে থেকে যান ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। গুঞ্জন আছে, মাসিক ‘চাঁদা’তেই সব ম্যানেজ হয়ে যায়।
স্থানীয় এক সচেতন নাগরিকের আহ্বান
“আমার ছেলেটা ক্লাস সেভেনে পড়ে। ওর বন্ধুদের কেউ কেউ ওদের কাছ থেকে মাদক নিচ্ছে। আমি ভয়ে আছি—এই শহরে থাকব কীভাবে?”—বলছিলেন এক উদ্বিগ্ন মা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আইনগত সহায়তা প্রদান কেন্দ্রের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহিন আলম এর সাথে তিনি জানান, মাদকের ছোবলে শহরের ভবিষ্যৎ আজ ঝুঁকিতে। স্বামী-স্ত্রী মিলে এই ব্যবসা চালানো শুধুই এক উদাহরণ—এ রকম অসংখ্য জুটি আজ ছড়িয়ে পড়েছে শহরের অলিগলিতে। এখন প্রশ্ন—প্রশাসন কি দেখছে না, না কি দেখেও কিছু করছে না ? সময় এসেছে কঠোর পদক্ষেপের, নইলে ধ্বংস হবে প্রজন্ম—নীরবে, নিঃশব্দে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার শ্যামপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।