
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে প্রতারণামূলক অপরাধ ক্রমেই বাড়ছে। আমাদের সমাজে সুদূর অতীতকাল থেকে প্রতারণামূলক অপরাধ বিরাজ করলেও নতুন নতুন কৌশলের আবির্ভাবে এ ধরনের অপরাধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বদৌলতে এর মাত্রা বেড়েছে আরও বহুগুণ। আগে প্রতারকচক্র মানুষের অসচেতনতার সুযোগে তাদের আস্থা অর্জন করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিলেও তা ছিল সামান্য বা কিছু পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীতে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কখনো তিনি নিজেকে গণমাধ্যমকর্মী, কখনো মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
🕵️♂️ পরিচয়ের আড়ালে প্রতারণা
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মনির হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজেকে সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত করেন। এরপর বিভিন্ন ব্যক্তি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে “সংবাদ প্রকাশ” বা “মানবাধিকার তদন্ত” সংক্রান্ত অভিযোগ দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা দাবি করেন।
একজন ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের বার্তাকে জানান,
> “মনির প্রথমে ০১৯২৩৮৯০৭৪৯ ফোন করে নিজেকে অনলাইন নিউজ পোর্টালের রিপোর্টার পরিচয় দেন। এরপর বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে অভিযোগ এসেছে—তবে কিছু সহযোগিতা করলে বিষয়টি ‘মিটিয়ে ফেলা’ যাবে।”
সূত্র জানায়, মনির হোসেনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি চক্র যারা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা কালের বার্তাকে বলেন,
> “কেউ যদি সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মীর পরিচয় দিয়ে অর্থ দাবি করে, তা সঙ্গে সঙ্গে থানায় বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানাতে হবে। এসব প্রতারণা অপরাধ হিসেবে দণ্ডনীয়।”
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডিজিটাল মাধ্যমে ভুয়া পরিচয়ের অপব্যবহার এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে এই প্রতারণা আরও বাড়বে। তাই কেউ সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে যোগাযোগ করলে তার বৈধ পরিচয় যাচাই করা জরুরি।









