
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রায়ই ঝটিকা মিছিল করছে। জনশূন্য রাস্তায় আকস্মিক এসব মিছিল আয়োজনে বিপুল অংকের অর্থ ঢালা হচ্ছে। নির্দিষ্ট অংকের অর্থের লোভে অনেকে মফস্বল থেকে ঢাকায় এসে ঝটিকা মিছিলে অংশ নিচ্ছে। হচ্ছে গ্রেপ্তারও।
পুলিশ বলছে, ঝটিকা মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ও আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। এ ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের তিন হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, প্রবাসী নেতাদের অর্থায়নে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের দিয়ে এবং হতি দরিদ্র দিন মজুরদের মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দিয়ে এসকল মিছিলে আনা হচ্ছে তারা মূলত সরকারবিরোধী আভাস দিচ্ছে।”
মিছিল গুলোতে বেশিরভাগ অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর পথ শিশু তাই কমলাপুর ষ্টেশনে প্রতিবেদক পরিচয় গোপন করে একাধিক পথশিশুদের অর্থের প্রলোভন দিয়ে মিছিলের কথা বলতেই হঠাৎ অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর নাম ইসমাইল হোসেন, কিছুটা ভয় পেয়ে ধীরে উত্তর দেয় “গতমাসে মাত্র ১০ মিনিট একটি মিছিলে গেছিলাম ২৫০০ টাকা পেয়েছি।” বন্ধুত্বপূর্ণ স্বর ও ভাষা ব্যবহার করে বিষয়টি জানতে চাইলে বলেন রাজু ভাই ও ইউনুস ভাইয়ের মাধ্যমে দুই বার মিছিলে গেছি টাকা আগেই দিয়ে দেয় গুলিস্তান মিছিলে আমি আরও ৪জন নিয়ে গেছিলাম বিএনপি অফিসের সামনে আগের দিন দেখা করছে এক হাজার টাকা দিয়েছিল খাওয়ার জন্য আর লোক যোগার করতে আপনি কতো দিবেন ?
বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকদিন অনুসন্ধান করলে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাবেক সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল একাধিক ছাত্র হত্যা মামলার আসামি পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি বর্তমানে তার ভাগ্নে রাজু ঢালী ও শরিয়তপুর জেলা কৃষকলীগের নেতা ইউনুস কাজী মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বিরোধী এবং আওয়ামী ঝটিকা মিছিল পরিচালনা করছেন।
সূত্রে জানা যায়, একাধিক প্রবাসী নেতারা অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালের মাধ্যমে ভাগ্নে রাজু ঢালী ও কৃষকলীগের নেতা ইউনুস কাজী কাছে আসছে তিনি তিন তারকা রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল অবস্থান করে আসছেন হোটেল পূর্বাণী, প্যাসিফিক, মানহা ইন্টারন্যাশনাল, বর্তমানে কৌশল অবলম্বন করে বিএনপি অফিসের পাশেই তিন তারকা হোটেলে অবস্থান করে আসছেন এবং কিশোর ইসমাইল এর তথ্য ও প্রতিবেদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, মিছিলের প্রতিটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রাজু ঢালী ও শরিয়তপুর জেলার কৃষকলীগের সদস্য ইউনুস কাজীর হাতে ছিল।
“মিছিলের খরচ এবং লজিস্টিক প্রায় পুরোপুরি প্রবাসী নেতাদের অর্থায়নে সংগৃহীত করছেন যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল এর মাধ্যমে অর্থায়ন দিচ্ছে উকিয়ত উল্লাহ উকিল (শরীয়তপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকে সভাপতি) নুরুল আমিন হাওলাদার (ইতালি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কোতোয়াল এর ভাগ্নে রাজু ঢালী ইউনুস কাজী এসকল অর্থ দিয়ে তিন তারকা হোটেলে সরকার বিরোধী ও দেশে যেকোনো সহিংসতা করার জন্য বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল ককটেল বিস্ফোরণ সহ একাধিক জন দুর্ভোগ করার প্রক্রিয়া করছে”
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চলতি বছরের আজকের দিন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্যই যারা সরাসরি মিছিলে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজধানীতে প্রায়ই ঝটিকা মিছিল করছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। জনশূন্য রাস্তায় আকস্মিকভাবে এসব মিছিল আয়োজনের পেছনে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নির্দিষ্ট টাকার লোভে মফস্বল থেকে অনেকেই ঢাকায় এসে এসব মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। এতে একাধিক গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চলতি বছরের আজকের দিন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্যই যারা সরাসরি মিছিলে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিসি তালেব জানান, এসব ঝটিকা মিছিল থেকে নিয়মিত ককটেল বিস্ফোরণ ও আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনা ঘটছে।
তদন্তে দেখা গেছে, এসব কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিবারই নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, মূলত তাদের উদ্দেশ্য হলো নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়া, ঢাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে সক্রিয়তা প্রদর্শন করা।
ঢাকার বাইরে থেকেও অনেকেই এসে এসব মিছিলে অংশ নিচ্ছেন জানিয়ে ডিসি তালেব আরও বলেন, তাদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়ার খরচসহ প্রতিজনকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়। এ অর্থ কোথা থেকে আসছে, কারা দিচ্ছেন—তা শনাক্তে কাজ চলছে।
নিষিদ্ধ সংগঠনের ঝটিকা মিছিলে অর্থায়নকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি একদিনে ২৪৪ জন এবং অন্যদিন ১৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে হাতেনাতে ককটেলসহ ধরা হয়েছে। এসব ককটেল বিপজ্জনকভাবে তৈরি করা হয় এবং এর উদ্দেশ্য জনগণের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করা।
ডিএমপির মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতার হওয়া অধিকাংশই ঢাকার বাইরের ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা।
এটি প্রমাণ করে, তারা পরিকল্পিতভাবে রাজধানীতে এসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সামনে থাকায় রাজনৈতিক তৎপরতা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়ার সক্ষমতা ডিএমপির রয়েছে।









