
এস এম রিপন রুদ্র
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর প্রায় বন্ধ রয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের ক্লাব পাড়াসহ বেশিরভাগ ক্লাবের জুয়ার আসর। তবে পেশাদার জুয়াড়িরা ক্লাব ছেড়ে এখন ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন বাসাবাড়িতে। ধনাঢ্যরা গোপনে অভিজাত এলাকার ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে জমিয়ে তুলেছে জুয়ার আসর। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকারের যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো খালেদ মাহমুদের সহকারী এবং উক্ত ক্যাসিনো জুয়ার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি ফ্যাসিবাদী সরকার পতন হওয়ার পর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন । বর্তমানে তিনি
রাজধানীর গুলশানে ঐতিহ্যবাহী বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছে।
জমজমাট জুয়ার আসর। নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের কষ্টে উপার্জিত অর্থ শুষে নেয়া কাটাকাটি বা ফ্ল্যাশ জুয়া চলে রাতভর জুড়ে। আরও দুঃখজনক বিষয় হলো যে, এই জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা সোহেল খান ওরফে ক্যাসিনো সোহেল! ক্যাসিনো খালেদ মাহমুদের ম্যানেজার এই সোহেল খান বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৪/১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্যাসিনো কাণ্ডে আটক অন্যতম যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভুইয়া ওরফে ফ্রিডম খালেদের প্রধান সহযোগী এবং ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের ক্যাসিনো ম্যানেজার ছিলেন এই সোহেল খান। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ফ্রিডম খালেদ অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকেন সোহেল খান। তারপর আরেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী মতিঝিলের সাঈদ কমিশনারের সঙ্গে ভিড়ে যান এবং শাহজাহানপুর রেলওয়ে ক্লাবে জুয়ার ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের দৃষ্টিতে জুয়া খেলা শুধু একটিমাত্র অপরাধ হলেও এটিকে ঘিরে আরও অনেক অপরাধের জন্ম হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি থেকে শুরু করে পারিবারিক সহিংসতা এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরির নেপথ্যে জুয়া অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি তিতুমীর কলেজের সাবেক ভিপি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ঢাকা উত্তর বিএনপির সিনিয়র সদস্য এজিএম শামসুল হককে আহবায়ক এবং জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা গোলরক্ষক ছাইদ হাসান কাননকে সদস্য সচিব করে বাড্ডা জাগরণী সংসদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। অদ্যাবধি ওই কমিটিই ক্লাবটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাইদ হাসান কাননের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদেরও কানে এসেছে, আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে দীর্ঘদিন ধরে চলা জুয়ার আসর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।