
🕵️♂️ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন (২)
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক—দিনে সাধারণ মানুষের বসতি, রাতে যেন ভিন্ন এক শক্তির রাজ্য! রাস্তার মোড়ে মোড়ে চিহ্নিত কিছু মুখ, আর তাদের পেছনে অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিত এক নাম—আলমগীর। অভিযোগ, দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে জমি দখল, চাঁদাবাজি, অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন বাণিজ্য, এমনকি রাজনৈতিক রঙ বদলের খেলায় এই ব্যক্তি এখন স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের প্রতীক।
স্থানীয়দের ভাষ্য—
“ভাষানটেকের রাজনীতি, ভাড়ার ঘর আর বিদ্যুতের তার—সবকিছুর মালিক যেন আলমগীর!”
🔥 দল কে ক্ষমতায়, তা নয় — আলমগীর কোন দলে, সেটাই নাকি গুরুত্বপূর্ণ!
সরকার পরিবর্তন হলে সাধারণ মানুষের আশা থাকে পরিবর্তনের হাওয়া বইবে। কিন্তু ভাষানটেকে চিত্র উল্টো।
এখানে ক্ষমতার পালাবদল মানেই আলমগীরের নতুন রং—
গত নির্বাচনে এক দল, পাঁচ বছর আগে অন্য দল, তার আগেও আরেক দল! স্থানীয়দের ব্যঙ্গ—
“আলমগীর আগে দল দেখে না, দেখে চেয়ার—যে দলে চেয়ার আছে, সে দলে আলমগীর!”
⚡ অবৈধ বিদ্যুৎ বাণিজ্যের নেটওয়ার্ক
সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় আরেক দুনিয়া। বৈধ মিটারের বাইরে এক জালের মতো ছড়িয়ে থাকা তার—এলাকার ঘরবাড়ি, দোকানপাট, এমনকি ক্ষুদ্র কারখানাতেও।
প্রতিটি লাইনই নাকি “চুক্তিভিত্তিক ভাড়া”।
বেনারসী বস্তীর এক ভুক্তভোগীর কণ্ঠে আতঙ্ক:
“মাসে ১,০০০ টাকা ভাড়া, তার সাথে বিদ্যুতের নামে যা খুশি নেয়। না দিলে তার কেটে দেবে, আবার দখলদার পাঠিয়ে ঘর ভাঙবে। কোথায় যাব?”
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন—
“এই এলাকায় অভিযান দিতে গেলে আগে জানতে হয়, আলমগীর কোন দলের ‘মানুষ’ এখন!”
🧱 জমি দখল থেকে কোটি টাকার কারবার
খাস জমি, পরিত্যক্ত প্লট বা ঝুপড়ি ঘর—সবই তার দখলের ব্লুপ্রিন্টে নাকি রয়েছে।
জমি দখল করে ঘর উঠানো, তারপর তা ভাড়া—আর সেটিই বছরের পর বছর ধরে কোটি টাকার কালোবাজারি হিসেবে গড়ে উঠেছে। কারো প্রতিবাদে তাকে নাকি “বহিরাগত”, “সন্দেহভাজন” বা “বিরোধী দলের লোক” বানিয়ে শায়েস্তা করা হয়।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ—
“ওর সঙ্গে কোনো দলের লোকই বেশি দিন লাগতে পারে না, কারণ সে দলের চেয়ে নিজের পকেটকে বড় মনে করে।”
🧩 স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রশ্ন উঠছে—কে দেয় আশ্রয়?
এতো অভিযোগ, এতো চাঁদাবাজি, এতো অবৈধ কার্যক্রম—তবুও আলমগীরের প্রভাব কমছে না।
স্থানীয়দের কৌতূহল—
এই “অদৃশ্য শক্তি” কে?
কাদের ছত্রছায়ায় এই ব্যবসা এত বছর টিকে আছে?
এদিকে এসকল বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা বলছেন, দেশজুড়ে এভাবে অপরাধের মাত্রা বাড়তে থাকায় অপরাধ দমন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আরো হুমকির মুখে পড়বে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কোনো অপরাধেরই লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধা করছে না।
তবে অপরাধ দমন নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, যেকোনো ঘটনায় জড়িত চক্রকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। পুলিশের সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান চালাচ্ছি।’ অন্যদিকে সাধারণ মানুষ বলছে, অপরাধীরা ধরা পড়লেও শাস্তি না হওয়ায় তারা পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে আইনের শাসন ও বিচার প্রক্রিয়ার দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
# আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের তথ্য আমাদের জানাতে পারেন ।
ইমেইল: info@dailykalerbarta.online
মুঠোফোন : +88 ০৯৭৩৮ ৩৩৩ ৭৩৭









